জাকাতের টাকায় বিয়ে হলো হিন্দু ধর্মাবলম্বী অসহায় এক নারীর।
রোববার (১৯ মে) রাতে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পূর্ণিমা কর্মকার রানী নামের ওই নারীর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
জানা গেছে, বিয়ের খরচের সিংহভাগ বহন করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাগুরার এক ব্যবসায়ী। তিনি শহরের পারনান্দুয়ালী এলাকার বাসিন্দা।
তার দেয়া জাকাতের অর্থে পূর্ণিমার বিয়েতে আলোকসজ্জা, স্টেজ, ব্যান্ডপার্টি সব আয়োজন হয়েছে। বেশ ধুমধাম করেই সোমবার (২০ মে) স্বামীর বাড়িতে পা রেখেছেন নববধূ পূর্ণিমা।
স্থানীয়রা জানান, অসাম্প্রদায়িকতার দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ রাখতে জাকাতের জন্য নির্ধারিত অর্থ ব্যয় করেছেন পারনান্দুয়ালী এলাকার ওই ব্যবসায়ী।
এ বিয়ের অন্যতম আয়োজক স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যাপিকা পলি সাহা।
তিনি বলেন, পূর্ণিমার বিয়ের খরচের সিংহভাগই এসেছে একজনের জাকাতের টাকা থেকে। বাংলাদেশ যে ধর্মীয় সম্পৃতির এক অনন্য উদাহরণ তা এ ঘটনায় প্রমাণিত।
অসহায় পূর্ণিমা বিষয় পলি সাহা বলেন, ৪ বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পূর্ণিমার বাবা ক্ষিতিষ কর্মকার পরপারে চলে যান। এরপরই মাসহ পূর্ণিমার পরিবার অসহায় হয়ে পড়ে। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনো মতে সংসার চলে তাদের। তবে অভাবের মধ্যেও নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন পূর্ণিমা।
সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী বিমল দাস পূর্ণিমাকে বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করলে পলি সাহা ও তার স্বামী তরুণ ভৌমিকসহ স্থানীয় কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে পূর্ণিমার বিয়ের আয়োজন শুরু করেন।
বিষয়টি জানতে পেরে এলাকার বিভিন্ন স্তরের মানুষ সাধ্যমতো সহযোগিতা করেন। এ সময় এগিয়ে আসেন ওই ব্যবসায়ী।
পূর্ণিমার সুখী দাম্পত্য জীবন কামনা করে মাগুরা পৌরসভার কাউন্সিলর মো. সাকিব হাসান তুহিন বলেন, আমরা সবাই মিলে একটা অসহায় মেয়ের বিয়েতে সহায়তা করেছি। এক্ষেত্রে তার ধর্মীয় পরিচয় মুখ্য নয়। মুখ্য হলো আমাদের সদিচ্ছা।
জানা গেছে, বিয়ের অনুষ্ঠানে সাধ্যমতো সহায়তা করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পংকজ কুণ্ডু, পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুলসহ স্থানীয় অনেকেই।
উৎস: দৈনিক যুগান্তর
প্রকাশ : ২২ মে, ২০১৯,